শিউলিমালা একাডেমি

চিন্তা ও দর্শন

জ্ঞানের আখলাক

একটি সভ্যতা কেমন? ঠিক কেন এমন? কিংবা বর্তমানে আমরা যে ব্যবস্থাপনার অধীনে জীবনযাপন করছি সেটি কেমন এবং কেন এমন?— এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জবাব পেতে আমাদের আরও একটি মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপন করতে হবে, সেটি হলো: আমরা যেই সভ্যতা সম্পর্কে জানতে চাই সেই সভ্যতায় জ্ঞান কীভাবে ক্রিয়াশীল ছিল। একই প্রশ্ন বর্তমান জীবনধারার স্বরূপ উদঘাটনের ক্ষেত্রেও উপযোগী। বলা […]

জ্ঞানের অন্যতম উৎস সুন্নত ও হাদিসের ক্ষেত্রে উসূলের প্রাসঙ্গিকতা

ইসলামের চারটি মূল উৎস থেকে শুরু করে জ্ঞানের সকল শাখার মূল হলো উসূল। প্রত্যেক জ্ঞানের ৩টি মূল বিষয় থাকে, তন্মধ্যে অন্যতম হলো সেই জ্ঞানের মেথোডলজি। জ্ঞান শুধু তথ্য উপাত্তের নাম নয়; বরং হাকিকত অন্বেষণের দিকে উন্মুক্তকারী একটি পথ। এই পথ হলো সামগ্রিকতার পথ, কোনো সংকীর্ণতা এই পথে চলতে গেলে বাধাগ্রস্ত বা বিপথগামী করে তুলবেই। আর

বায়তুল মাকদিস বিজয়ের স্বপ্ন ও সংগ্রাম

[[প্রফেসর ডক্টর আব্দুল ফাত্তাহ আল-ওয়াইসি একজন প্রখ্যাত চিন্তাবিদ, গবেষক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ। তিনি একইসাথে ইসলামের ইতিহাস, ভূরাজনীতি ও বাইতুল মাকদিস বিষয়ক গবেষণায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। বিশেষ করে, ‘বারাকা সার্কেল থিওরি’ এবং ‘আমান থিওরি’র মতো গুরুত্বপূর্ণ তাত্ত্বিক ধারণা প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে ভূরাজনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাইতুল মাকদিস ফাউন্ডেশনের

ইসলামী সভ্যতায় ইনফাকের সংস্কৃতি

ইনফাক বলতে কী বুঝায়? সহজ ভাষায় বললে, ইনফাক বলতে বুঝায় আল্লাহর পথে ব্যয়৷ ইনফাক রমজানের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং একইসাথে সামাজিক সংহতিরও গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান৷ আজকের দুনিয়ায় প্রতিনিয়ত আমরা আমাদের সমাজে বিভিন্ন ধরনের যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি, এইসব সমস্যার মূলে অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে আমাদের মধ্য থেকে ইনফাকের সংস্কৃতি উঠে যাওয়া৷ এজন্য আজকে আমি

রহমের দর্পণে প্রাণীকূল : ইসলামী সভ্যতা বনাম পাশ্চাত্য

প্রাণিকুলের অধিকার রক্ষা ও তাদের কল্যাণার্থে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৪ অক্টোবর পালিত হয় ‘বিশ্ব প্রাণী দিবস’। ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে ১৯৩১ সালে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের এক সম্মেলনে দিবসটি ঘোষণা করা হয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ন্যাচার ওয়াচ ফাউন্ডেশন দিবসটি সারাবিশ্বে প্রাণীপ্রেমীদের নিয়ে পালন করে থাকে। যেই ইউরোপীয়রা প্রাণীদের প্রতি এতটা সহানুভূতি বিশ্বের সামনে দেখিয়ে থাকে, বাস্তবে তারা প্রাণীদের সাথে কেমন আচরণ

ইসলামী সভ্যতায় নারীদের স্বরূপ ও ভূমিকা

মানুষকে কোন দৃষ্টিতে, কোন আঙ্গিকে বা কোন দর্শন দিয়ে বিচার করা হয়, সে বিষয়টা বরাবরই ইসলামের অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক, উভয়ক্ষেত্রেই আলাপ-আলোচনা ও পর্যালোচনার মৌলিক একটি বিষয় ছিল। স্বাভাবিকভাবেই প্রসঙ্গত আলোচনায় আসত নারী-পুরুষের জীবনধারণের পদ্ধতি, সামাজিক অবস্থান, কর্মক্ষেত্র ও পৃথিবীতে আল্লাহর একজন প্রতিনিধি হিসেবে তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য নিয়ে। আর প্রতিবারই ইসলাম এ’বিষয়গুলোর যৌক্তিক পর্যালোচনা করার পাশাপাশি বিরোধীদের

“হারিয়ে যাওয়া মক্তব ও তার ইতিহাস “

উপমহাদেশে মক্তব শিক্ষা শুরু যেভাবে: আলিফ যবর- আ। বা যবর- বা। তা যবর- তা। অসংখ্য মক্তবে পাখির মতো নিষ্পাপ শিশুদের কুজন-কলরবে মুখরিত এ সবুজ শ্যামল বাংলাদেশের প্রতিটি রোদরাঙা শিশির ভেজা সকাল। ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়েরা টুপি পড়ে ওড়না জড়িয়ে ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে দল বেঁধে ছুটে চলে পাড়ার মসজিদের দিকে। মসজিদের ভেতরে বা চত্বরে ইমাম

বাংলার বস্ত্রশিল্পের শুরু যেখান থেকে…

ভূমিকা : সুদূর অতীতকাল থেকে বাংলা ভূ-খন্ড যে কারণে পৃথিবীব্যাপী সুপরিচিত ছিল, আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেছিল, তার অন্যতম প্রধান কারণ হলো বয়নশিল্প বা বুননশিল্প। সেই সূত্রে বাংলার মসলিনের কিংবদন্তী আজও সবার মুখে মুখে ফেরে। শত শত বছর ধরে অতি সাধারণ স্থানীয় কিছু যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বাংলাদেশের তাঁতিরা দক্ষ হাতে  চরম নিপুণতার সহিত যেসব উৎকৃষ্ট ছড়িয়ে

   ইসলামের ইতিহাসে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী মুসলিম নারীগণ 

আমরা সকলেই কমবেশি এ’কথার সাথে অভ্যস্ত যে, ইসলামী সভ্যতায় চিকিৎসাশাস্ত্রের ইতিহাসে মুসলিম নারীদের অবদান খুব একটা নেই বললেই চলে। এমনকি অনেকেই মনে করেন, এই অঙ্গনে নারীদের তেমন কোনো ভূমিকা নেই। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে ইসলামী সভ্যতার স্বর্ণালী ইতিহাসে বৈশ্বিক ও ধর্মীয় যেকোনো ক্ষেত্রে মুসলিম নারীদের যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো, তেমন-ই স্বাস্থ্যখাতেও তাদের অবদান ছিলো অপরিসীম, যা

পাশ্চাত্যের তথাকথিত নারী স্বাধীনতা বনাম ইসলামে নারীর মর্যাদা ও অধিকার

১. বিগত তিনশো বছর থেকে পাশ্চাত্য সভ্যতা সারা বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করে আছে। এখন বলতে গেলে সর্বত্র প্রায় তার একচ্ছত্র আধিপত্য। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাবে ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতি মুসলিম দেশগুলোতেও কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। পাশ্চাত্যবাদ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থাপনায় বিরাট পরিবর্তন সাধন করেছে। পাশ্চাত্য সমাজে নারী ছিল গৃহকোণে আবদ্ধ, পুরুষের সেবাদাসী, সব রকমের অর্থনৈতিক ও